মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের আর্টিকেলে। পুষ্টিতে ভরপুর মসুরের ডাল বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মসুরের ডালে রয়েছে ফাইবার ও প্রোটিন যা হার্টের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। সারা বিশ্ব জুড়ে মসুরের ডালের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

বিভিন্ন গবেষণা ও বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে মসুরের ডাল শরীরের স্বাস্থ্যর রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপকারী। মসুরের ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার রয়েছে। তাই মসুরের ডালকে মাংসের বিকল্প হিসেবে ধরা হয়। মসুরের ডাল খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিতে ভরপুর। মসুরের ডালের উপকারিতা পাশাপাশি বিভিন্ন অপকারিতা ও রয়েছে। চলুন তাহলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো হলঃ

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। মসুর ডালে রয়েছে প্রোটিন,ফাইবার এবং আয়রন। যেটি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। মসুরের ডাল শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান দেয়। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যদি নিয়মিত মসুরের ডাল খাওয়া যায় তাহলে শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ হয়। মসুরের ডালে থাকা ফাইবার ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

নিয়মিত বসুরের ডাল খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার পরে যাদের ব্লাড সুগার বেড়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে মসুরের ডাল খাওয়া খুবই উপকারী। মসুরের ডালে রয়েছে বিশেষ গুনাগুন। যেটি শরীরের হৃদযন্ত্র সজল রাখে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। শরীরের প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া মসুরের ডাল রিস্তকে ঝুকি কমায় এবং রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণ করে হার্টের অবস্থা ভালো রাখে।

মসুরের ডালে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। অতিরিক্ত মসুরের ডাল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। মসুরের ডালে অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা রয়েছে যারা বিভিন্ন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মিশ্রিত করে। এসব ক্ষতিকার কেমিক্যাল এর ফলে মসুরের ডাল শরীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। বাজারে ক্রয় ক্রেতা এমন অনেক মুসুরির ডাল পাওয়া যায় যেগুলো রং মেশানো। তাই মসুরের ডাল ক্রয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই দেখে ও বুঝে ক্রয় করা উচিত।

মসুর ডালের ফেসপ্যাক তৈরি 

মসুরের ডাল দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। মসুর ডালের সাথে আরও কিছু উপাদান মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগানো যায়। মসুর ডালের ফেসপ্যাক ত্বককে করে মসৃণ ও উজ্জ্বল। ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। মসুরের ডাল ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। মসুরের ডালের সাথে মধু, টক দই এবং বেসন মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। মসুরের ডালের ফেসপ্যাক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কেননা এই ফেসপ্যাক ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের মৃতকোষগুলো দূরে রাখে।

আরও পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়

মসুরের ডালের ফেসপ্যাক ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বককে মসৃণ করে তোলে। মসুরের ডালের ফেসপ্যাক বিভিন্নভাবে তৈরি করা যায়। মসুরের ডাল গুঁড়ো করে এর সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা দুধ মিশিয়েও ফেসপ্যাক বানানো যায়। মসুরের ডালের ফেসপ্যাক ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে। প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে মশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। মসুরের ডালের ফেসপ্যাক প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আশানুরূপ ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

  • মসুরের ডালের গুঁড়ো তৈরি করার জন্য মসুরের ডাল ভালো করে শুকিয়ে নিন এবং ব্লেন্ডারের গুরু করে নিন।
  • একটি বাটিতে মসুর ডালের গুড়ো নিতে হবে। সেগুলোতে প্রয়োজনমতো দুধ বা পানি মেশাতে হবে।
  • আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে এর সাথে মধু যোগ করতে পারেন। এছাড়া যদি আপনি ফ্রেশনে চান তাহলে কয়েক ফোটা গোলাপ জল মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • এ সকল উপাদান গুলো একই সাথে মিশিয়ে নিন। এমনভাবে মেশাবেন যেন সেটা মসৃণ পেস্ট হয়ে যায়।
  • এবার ফেস প্যাকটি, আপনার পরিষ্কার ত্বকে সমানভাবে লাগিয়ে নিন।
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ঘষে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন।
  • এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।

মসুরের ডাল দিয়ে চুলের যত্ন 

চুলের যত্নে মসুরের ডাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মসুরের ডাল চুলে প্রাকৃতিকভাবে কাজ করে। চুলকে করে মজবুত,খুশকি দূর করা এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। শুধু জানতে হবে কিভাবে মসুরের ডাল দিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করা হয়। আপনি যদি সঠিকভাবে হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারেন তাহলে মসুরের ডাল দিয়ে চলে যত্ন নেওয়া কার্যকর হবে। চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে মসুরের ডাল দিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।

  • প্রথমে, এক থেকে দুই কাপ মসুরের ডাল নিতে হবে। দুই চামচ টকদই এবং এক চামচ মধু।মসুরের ডাল ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো মসুরের ডাল ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে গুঁড়ো করে নিতে হবে।গুঁড়ো মসুরের ডালের সাথে টক দই এবং মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে।মিশ্রিত এই পেস্টটি চুলের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত লাগান এবং ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

  • দ্বিতীয়, ১ থেকে ২ কাপ মসুরের ডালের গুড়া এবং দুই চামচ নারিকেল তেল নিতে হবে।মসুরের ডালের গুড়ো সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তৈরিকৃত এই পেস্টটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিন।পেস্টি ভালো করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করার পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

  • তৃতীয়, মসুরের ডাল যেহেতু খুশকি দূর করতে সাহায্য করে তাই মসুরের ডাল ও লেবুর রস দিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিন।২ চামচ মসুর ডালের গুড়া ও এক চামচ লেবুর রস সাথে সামান্য গরম পানি নিতে হবে।এই তিনটি উপকরণ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট করুন। মাথার ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

এই প্যাকগুলো সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। আপনার যদি কোন এলার্জির সমস্যা থাকলে সে ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন। মসুরের ডাল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুলকে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

মসুরের ডালে রয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান। এছাড়া মসুরের ডালে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,ফাইবার ও প্রোটিন। যা ত্বকের যত্নে কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করা যায়। মসুরের ডাল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে তককে করে উজ্জ্বল ও ফর্সা। মসুরের ডাল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ত্বকের মরা চামড়া দূর করে এবং তোকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ ত্বকের যত্নে মসুরের ডাল ব্যবহার করে আসছে। মসুরের ডালে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। এমন কিছু উপাদান যেগুলো ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী।

মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

  • মসুরের ডালের ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে দুই চামচ মসুর ডাল গুড়ো, পরিমাণ মতো কাঁচা দুধ নিতে হবে।
  • মসুর ডালের গুড়ো সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এই পেজটি সমস্ত মুখে লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকানোর পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • মসুরের ডাল মধু ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক তৈরি করুন। ২ চামচ মসুর ডালের গোড়া, এক চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস।
  • এই তিনটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রিত ফেসপ্যাক টি আপনার ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
  •  এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ফর্সা এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • মসুর ডালের গুড়া এবং ২ চামচ আলুর রস নিতে হবে। এই মিশ্রণ দুটি একই সাথে মিশিয়ে তোকে ২০ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • মসুরের ডাল এবং কাঁচা হলুদ নিন। দুই চামচ মসুর ডালের গুড়া এবং এক চামচ কাঁচা হলুদের গুঁড়ো সাথে পরিমাণ মতো গোলাপজল নিন।
  • এই উপকারগুলো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর মুখে ও ঘাড়ে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • মসুর ডালের এই ফেসপ্যাক গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর হবে। তোকে রাখবে মসৃণ ও উজ্জল। ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে এবং ত্বককে ফর্সা করতে সাহায্য করবে।

মসুর ডালের অপকারিতা

মসুরের ডালের রয়েছে অনেক উপকারিতা। ত্বক এবং চুলের জন্য মসুরের ডাল কার্যকরী ভাবে ভূমিকা রাখে। তবে মসুরের ডাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় যে, মসুর ডালের গুঁড়ো ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক জ্বালাপোড়া বা লালচে ভাব হয়ে যায়। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে হয় না কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হয়। এটা হওয়ার কারণ হচ্ছে ত্বক সংবেদনশীল। এরকমটা হলে তো অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় 

মসুরের ডালের ফেসপ্যাক যদি শুকনো ত্বকে ব্যবহার করা হয় তাহলে ত্বকের তেল শোষণ করতে পারেন। যদি এটি অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয় তাহলে তো বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। তাই মসুরের ডালের সাথে মধু বাদুর মিশিয়ে ব্যবহার করায় উত্তম। অনেকের ক্ষেত্রে মসুরের ডাল ব্যবহারের জন্য তোকে এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ব্যবহারের আগে অল্প পরিমাণে ত্বকের অন্য অংশে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। অতিরিক্ত মসুর ডালের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। মসুরের ডাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিবেন।

মসুর ডাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় 

মসুরের ডাল যেমন ত্বক ও চুলের জন্য কার্যকরী তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। মসুরের ডালে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপাদান। বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর মসুরের ডাল যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে এবং সুস্থতা বজায় রাখে। মসুরের ডালে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন। যা দেহের কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মসুরের ডালে প্রচুর পরিমাণে আইরন রয়েছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে।

মসুরের ডালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। শরীরের বিভিন্ন কোষ ক্ষতি রোধ করে এবং বার্ধক্য জনিত সমস্যা থেকে দূরে রাখে। এছাড়াও মসুরের ডালে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন বি ও জিংক। ফাইবার শরীরে হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থকে বের করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি ও জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মসুর ডালে রয়েছে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম। যার হৃদয়ে ঝুকি কমায় এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

মসুরের ডাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় 

মসুর ডাল চোখে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। মসুরের ডাল হলো একটি পুষ্টিকর খাবার যা বিভিন্ন উপকারিতায় ভরপুর। মসুরের ডাল হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মসুরের ডালে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকার কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমতে সাহায্য করে। মসুরের ডালে থাকা ভাইবার হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কেননা উচ্চ রক্তচাপ হলো হৃদরোগের প্রধান কারণ। আর মসুরের ডাল সেটাকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়

মসুরের ডালে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রোটিন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। শরীরের কোষের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করে এবং হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখে। মসুরের ডালে থাকা প্রোটিন,শর্করা ও চর্বির শক্তি প্রদান করে। শরীরে সামরিক চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মসুরের ডাল কম ক্যালরি ও কম ফ্যাট যুক্ত হওয়ার কারণে এতে অনেক পুষ্টি রয়েছে। তাই মসুরের ডাল হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

মসুরের ডাল রান্না বা খাবার নিয়ম

মসুরের ডাল হল অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। এতে রয়েছে বহুগুন পুষ্টি। মসুরের ডাল খুবই সহজ ভাবে রান্না করা যায়। মসুরের ডাল গোটা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয়। মসুরের ডালে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, আইরন এবং অন্যান্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। মসুরের ডাল বিভিন্ন উপায়ে রান্না করা যায়। মসুর ডালের বড়া, মসুর ডালের ঝোল, মসুর ডালের চচ্চড়ি আরো বিভিন্ন উপায়ে রান্না করা যায়। মসুর ডালের সুপ, মসুর ডালের তরকা এই খাবারগুলো খুবই মজাদার হয়। এসব খাবারে বিভিন্ন উপাদান মেশানোর ফলে খাবারটি আরো সুস্বাদু হয়।

মসুর-ডালের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

মসুরের ডাল দুপুর এবং রাতে খাবারের সাথে খাওয়া হয়। মসুরের ডাল রান্না করার পরে ভাত বা রুটি দিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া মসুরের ডাল সিদ্ধ করে সালাদের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। ডাল খাওয়ার সময় তাজা সবজির সালাদ যুক্ত করতে পারেন। এতে পুষ্টিগুণ আরো বৃদ্ধি পাবে। মসুরের ডাল খুবই তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয় এবং হাজামের জন্য খুবই কার্যকরী। মসুরের ডাল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি করা হয়। তাই মসুরের ডাল খাওয়ার জন্য খুবই সহজলভ্য একটি খাবার। মসুরের ডাল খুবই পুষ্টিকর এবং সহজলভ্য একটি খাবার।

মসুরের ডালের পুষ্টি উপাদান 

মসুরের ডাল হল অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। মসুরের ডাল ত্বক ও চুল এর জন্য খুবই কার্যকরী। তেমনি শরীর স্বাস্থ্যের জন্য মসুরের ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার। মসুরের ডালে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন, আইরন, মিনারেল এবং অন্যান্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। মসুরের ডাল আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। মসুরের ডালকে আমরা বিভিন্ন উপায়ে রান্না করে বা সিদ্ধ করে খেতে পারি। এতে পুষ্টির কোন হেরফের হয় না। তাই চলুন এবার মসুরের ডালের পুষ্টিগুণ গুলো দেখে নিই।

পুষ্টি উপাদানপরিমাণ
প্রোটিন২৫ গ্রাম
ক্যালরি৩৪০ গ্রাম
আয়রন৩.৫ মিগ্রা
ফাইবার১৫ গ্রাম
ফ্যাট১.৫ গ্রাম
ভিটামিন বি ১০.৩ মিগ্রা
ভিটামিন বি ৩১.১ মিগ্রা
ভিটামিন বি৬০.৫ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম৪০ মিগ্রা
পটাশিয়াম৩৮০ মিগ্রা

মন্তব্যঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আজকের পোস্টে। মসুর ডালের বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি। মসুরের ডালের পরিমাণ মতো ব্যবহারে আপনি বিভিন্ন উপকার পেতে পারেন। তবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করবেন। কারণ কোন কিছুই অতিরিক্ত ব্যবহার করা উচিত নয়। মসুরের ডাল চুল ও ত্বকের যত্নে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। এছাড়া রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও হৃদরোগের ঝুটি কমাতে যথার্থভাবে সাহায্য করে। এমন আরো চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন, ধন্যবাদ।

আরও পড়ুনঃ গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url