গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খাওয়ার নিয়ম ও কিভাবে,কতটুকু খাবেন জানুন

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের আর্টিকেলে। গর্ভকালীন সময়ে মেয়েরা বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকে। একজন গর্ভবতী মা ও তার বাচ্চাকে সুস্থ রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করেন। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে খেজুর হলো একটি অন্যতম খাদ্য। 

গর্ভাবস্থায়-খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা

একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য প্রচুর পরিমানে ফ্যাটি এ্যসিডের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এসব পুষ্টি উপাদান গুলো আপনার শরীরের এবং বাচ্চার জন্য অনেক উপকারি। চলুন গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলোঃ

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য এবং গর্ভের শিশুকে সুস্থ ও বিকশিত রাখার জন্য অবশ্যই নিয়ম করে খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুরে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ইত্যাদি খাদ্য উপাদান গুলো একজন গর্ভবতী মায়ের শরীর ও সন্তানের জন্য খুবই উপকারী। খেজুরের মধ্যে থাকা এসব গুষ্টি উপাদান গুলো গর্ভের সন্তানের বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী মা প্রতিনিয়ত নিয়ম করে খেজুর খেতে পারবেন।

  • আয়রনঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আইরন গর্ভবতী মায়ের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আইরন শরীরের রক্ত উৎপাদন বাড়ায় এবং গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিনঃ একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য ভিটামিনের প্রয়োজন অনেক বেশি। আর এই ভিটামিন পাওয়া যাবে খেজুর। খেজুরে থাকা ভিটামিন গর্ভবতী মা ও তার গর্ভস্থ সন্তানের শারীরিক ও মানসিক উন্নতিতে সাহায্য করে।
  • খনিজঃ খেজুরে রয়েছে খনিজ উপাদান। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, বি,সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম যা গর্ভের শিশুর জন্য শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়।
  • ফাইবারঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আর ফাইবার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। ফাইবার গর্ভবতী মায়ের পেটের গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আর এগুলো একজন গর্ভবতী মায়ের সাধারণ সমস্যা।
  • প্রাকৃতিক চিনিঃ খেজুরে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি। যেটি গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তি প্রদান করে। গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তির জন্য এই প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ খেজুর খুবই ভালো একটি খাদ্য।

গর্ভাবস্থায় খেজুর কেন খাবেন 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া অনেক উপকারী। কেননা খেজুরে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। কারণ গর্ভের শিশু এবং গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য বিকাশের প্রয়োজন। এজন্য অবশ্যই খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুরের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো মা ও শিশুকে সুস্থ রাখে। শিশুর বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। খেজুরে থাকা ফাইবার ও ওমেগা ফ্যাটি এসিড শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে কার্যকরী। একজন গর্ভবতী মা তার শরীর এবং শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষায় নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।

  • পুষ্টি উপাদানঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। যেমন ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আঁশ যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম যা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • আয়রনঃ একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রচুর পরিমাণে আয়রনের প্রয়োজন হয়। খেজুরে যে পরিমাণ আয়রন থাকে সেটি গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।
  • গর্ভপাতঃ অধিকাংশ মহিলাদের বিভিন্ন কারণে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এক্ষেত্রে যদি একজন মহিলা নিয়মিত খেজুর খায় তাহলে গর্ভবতী ঝুঁকি অনেক অংশে কমে যায়।

  • হরমোনঃ খেজুরে যেয়ে প্রাকৃতিক হরমোন রয়েছে তা গর্ভাবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে শরীরে হরমোন এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

  • শক্তি বৃদ্ধিঃ গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের শরীরে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োজন হয়। খেজুরে রয়েছে গ্লুকোজ, সুক্রোজ, ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক চিনি যার শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

  • পেটের সমস্যা দূরীকরণঃ গর্ভকালীন সময়ে অনেক মহিলাদের পেটের সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হজমের সমস্যা। খেজুরে থাকা আশ পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করে।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার নিয়ম 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার জন্য সঠিক নিয়ম বেছে নেওয়া উচিত। কেননা সঠিক নিয়মে খেজুর খেলে খেজুরের সমস্ত পুষ্টিগুণ গুলো পাওয়া সম্ভব। গর্ভধারণের প্রথম অবস্থায় খেজুর খাওয়া উচিত নয়। তবে গর্ভধারণের তিন মাস পর থেকে প্রতিনিয়ত ২ থেকে ৩টি করে খেজুর খেতে পারবেন খেজুরগুলো খাওয়ার সময় অবশ্যই ভালো মানের খেজুর খেতে হবে। খেজুর গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

  • স্বল্প পরিমাণে খাওয়াঃ খেজুরে যেহেতু অনেক চিনির পরিমাণ থাকে সে কারণে অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া উচিত নয়। অনেক গর্ভবতী মায়েরা আছে যারা উপকারিতার আশায় অতিরিক্ত খেজুর খেয়ে ফেলেন। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাই সীমিত মাত্রায় দুই থেকে তিনটি খেজুর খাওয়ায় যথেষ্ট।

  • দুধের সাথে খাওয়াঃ খেজুর আপনি দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।এতে করে আরো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া দুধ বা মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে এর স্বাদ আরো বেড়ে যায়।

  • খেজুর ধুয়ে খাওয়াঃ খেজুর খাওয়ার আগে অবশ্যই ধুয়ে নিতে হবে। কেননা বাজার থেকে কিনে আনা খেজুর গুলোতে ধুলাবালি বা রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে যেগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। 

  • খালি পেটে না খাওয়াঃ খেজুর খালি পেটে খাবেন না। কারন এতে গ্যাস বা বদহজমের সমস্যা হতে পারে। খেজুর খাওয়ার নিয়ম হলো সকালে নাস্তার সাথে বা বিকালের হালকা খাবারের সাথে। 

  • পর্যাপ্ত পানি খাওয়াঃ খেজুর খাওয়ার পর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। তাহলে হজমে সাহায্য করবে এবং আদ্রতা বজায় রাখবে। 

  • পুষ্টিকর খাবারঃ খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করুন। শাকসবজি, আমিষ, এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। এখাবার গুলো আপনার পুষ্টির চাহিদা পুরন করবে। 

  • শারীরিক অবস্থাঃ গর্ভকালীন সময়ে খেজুর খাওয়ার পর যদি কোনো সমস্যা বুঝতে পারেন অতিশিঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সুবিধা সমূহ 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সুবিধা গুলো নিম্নে দেওয়া হলঃ

গর্ভাবস্থায়-খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা

  • খেজুরে এমন কিছু প্রোটিন রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের শরীর স্বাস্থ্য ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • খেজুরে রয়েছে সারভিক্যাল ডাইলেশন যেটি খেজুর খাওয়া মহিলাদের মধ্যে দেখা গেছে কিন্তু যারা খেজুর খায়নি তাদের মধ্যে এর অভাব রয়েছে।
  • খেজুর খাওয়ার ফলে বাচ্চা প্রসবের স্বল্প পরিশ্রম হতে পারে।
  • খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের অক্সিটসীম প্রভাব বৃদ্ধি করে। যার কারনে গর্ভাশয়ের সংকোচন এবং জরায়ুর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
  • খেজুরে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম জরায়ুর পেশিগুলোকে সঠিকভাবে সংকোচন করতে সহায়তা করে।
  • এছাড়াও খেজুর প্রসব বেদনা থেকে অভিনব ভাবে শান্তি প্রদান করে এবং জরায়ুর ও সংকোচ সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে।
  • খেজুর খাওয়ার ফলে প্রসবের সময় স্বাচ্ছন্দ এবং সংক্ষিপ্ত প্রসব বেদনা সৃষ্টি করে যা সংকোচনে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন পর্যায়ে খেজুর খাওয়া 

গর্ভকালীন সময়ে অনেক মহিলারা বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন যে কোন সময়ে কি রকম ভাবে খেজুর খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থার নয় মাসের মধ্যে কত মাস অন্তর খেজুর কিভাবে কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

প্রথম তিন মাসের খেজুর খাওয়া 

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসে মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা স্বাস্থ্যের অন্ত্রের গতিবিধি, মাঝে মাঝে অস্বস্তি বোধ হওয়া, এইসব সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত দুই থেকে তিনটি করে খেজুর খান। এছাড়া আপনার শরীরে যদি রক্তের শর্করা কম থাকে বা কোন সমস্যা থাকে তাহলে প্রথম তিন মাসে আপনি খেজুরের পরিমাণ সীমিত আকারে রাখুন।

দ্বিতীয় ছয় মাসে খেজুর খাওয়া

আপনার যখন দ্বিতীয় ছয় মাস চলবে সেই সময় আপনি খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। কেননা এই সময় খেজুর খেলে আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ খেজুর হলো মিষ্টি জাতীয় খাদ্য। এছাড়া ও আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অল্প পরিমাণে খেজুর খেতে পারেন এতে কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

তৃতীয় নয় মাসের খেজুর খাওয়া 

আপনার গর্ভাবস্থায় যদি নয় মাসে পরিণত হয় তাহলে এ সময় নিয়মিত খেজুর খাওয়া শুরু করুন। কেননা এই সময় খেজুর খেলে আপনার প্রসব শ্রম সহায়তা করে থাকে। আপনার প্রসবের শুরু থেকে প্রসাবের প্রত্যাশিত তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ থেকে ৬টি করে খেজুর খান।

গর্ভাবস্থায় যে ধরনের খেজুর খেতে হবে

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই ভালো ধরনের খেজুর খাওয়া উচিত। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের খেজুর কিনতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে থেকে ভালো এবং স্বাস্থ্যকর খেজুরটি কেনা উচিত। এমন অনেক খেজুর রয়েছে যেগুলো নরম এবং আদ্রতা যুক্ত হয়। এছাড়া অন্যান্য খেজুর রয়েছে যেগুলো শুকনো শক্ত এবং চিবিয়ে খেতে হয়। এর মধ্যে থেকে আপনাকে অবশ্যই ভালো খেজুরটি বেছে নিতে হবে। যে খেজুরটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া যেতে পারে সে খেজুরটি বেছে নেওয়ায় উত্তম। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন খেজুরটি গর্ভাবস্থার জন্য উপকারী।

  • চীনা লাল খেজুরঃ এই খেজুরটি গর্ভকালীন সময়ে খাওয়ার ফলে শরীরে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া ও গর্ভবতী মায়ের দুধের পরিমাণ এবং রক্ত সরবরাহ করতে সহযোগিতা করে।
  • মেরযুল খেজুরঃ যেসব ধরনের খেজুর পাওয়া যায় তার মধ্যে এই খেজুরটি হল অন্যতম। কারণ এটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি। গর্ভবতী মায়ের জন্য এই খেজুরটি বিশেষভাবে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। মেয়ের চুল খেজুরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ সি এবং কে এর মত বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। যেগুলো একজন গর্ভবতী মাকে সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া গর্ভবতী মা ও শিশুকে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার সাবধানতা অবলম্বন 

গর্ভকালীন সময়ে অবশ্যই অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার প্রতিনিয়ত খাওয়া খেজুরের পরিমাণটা যেন অত্যাধিক বেশি না হয়ে যায়। কারণ আপনার অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। কেননা খেজুর হলো মিষ্টি জাতীয় খাদ্য। ডায়াবেটিসের হাত থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই পরিমাণ মতো খেজুর খাওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায়-খেজুর-খাওয়ার-উপকারিতা

আপনি যদি পরিমাণে থেকে বেশি খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরে রক্ত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। জিটিএ স্বাস্থ্যের জন্য একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া পরিমাণের বাইরে খেজুর খেলে দাঁতের ক্ষয় হয়। এইজন্য আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে নিয়মমাফিক এবং পরিমাণমতো খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুর এমন একটি খাদ্য যেটি প্রাচীনকাল থেকে গর্ভবতী নারীদের খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ এটি প্রসব শ্রম থেকে নারীদের সংকোচ সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

খেজুরে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান

খেজুরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আর সেজন্য গর্ভবতী মহিলাদের খেজুর খাওয়ার সুপারিশ করা হয়। কারণ খেজুর রক্তস্বল্প তার ঝুঁকি কমায় এবং গ্যাসের সমস্যা ছাড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করনে সাহায্য করে। এছাড়া খেজুর গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে। গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে যেসব পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয় সেগুলো নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে পাওয়া সম্ভব হয়।

শক্তি উপাদান ২২৭ ক্যালরি
প্রোটিন ১.৮ গ্রাম
ফাইবার ৬.৮ গ্রাম
ভিটামিন কে ২.৭ mcg
পটাশিয়াম ৬৯৫mcg
লোহা ০.৯ mg
ফ্যাট ০.২ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৫৪ mg
ফলিক ১৫ mc

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সঠিক সময়

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সঠিক সময়ে নির্বাচন করা উচিত। বেশ কিছু কারণে উপর নির্ভর করে খেজুর কোন সময় খাবেন। আপনারা দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বিশেষ করে গর্ভকালীন সময়ে খাদ্যাভাসের পরিবর্তন হওয়াটা প্রয়োজন। এছাড়া আপনার শরীরের প্রয়োজনীয়তা এবং খেজুরের উপকারিতার উপর নির্ভর করে। আপনি কিছু সাধারন নিয়ম অনুসরণ করে সঠিক সময়ে নিয়মিত খেজুর খেতে পারবেন। চলুন সেগুলো জেনে নিই।

  • সকালের খাবারের সময়ঃ সকালে আপনি নাস্তা করার সময় সাথে কয়েকটি খেজুর নিতে পারেন। তাছাড়া দিনের শুরুতে শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে। খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা যার শরীরে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে।
  • বিকালের হালকা খাবারের সাথেঃ গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। এ সময় আপনি যদি বিকেলে রাস্তার সাথে খেজুর খান তাহলে আপনার পাচনতন্ত্রের কাজকে সহায়ক করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আপনি কখনো খালি পেটে খেজুর খাবেন না কারণ খালি পেটে খেজুর খেলে পেটের বিভিন্ন অস্বস্তি বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।

শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আজকের পোস্টে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। একজন গর্ভবতী নারীর জন্য খেজুর বিশেষভাবে উপযোগী একটি খাদ্য। খেজুর গর্ভাবস্থায় খাবার উপকারিতা অনেক বেশি। ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন খেজুর খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব বেদনা অনেকাংশে সংবেদনশীল হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি একজন অনুভূতি মহিলা হন তাহলে অবশ্যই উপরে উল্লেখিত নিয়মমাফিক খেজুর খেতে পারেন। স্বাস্থ্য বিষয়ে আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url