চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকে আর্টিকেলে। চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন। চিয়া সিট এমন একটি খাবার যেটি সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এ খাবার খেয়ে আসছে। চিয়া সিডে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে সেহেতু এই চিয়া সিডকে আদর্শ খাবার হিসেবে গণ্য করা হয়।
বর্তমানে মানুষ খাদ্য এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। তাই কোন খাবারে পুষ্টি রয়েছে এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী সেটিকেই মানুষ বেশি প্রাধান্য দেয়। মানুষের প্রাধান্য দেওয়ার খাদ্য খাদ্য তালিকার মধ্যে চিয়া সীড অন্যতম খাদ্য। তাই চলুন চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিই।পেজ সূচিপত্রঃ চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো হলঃ
- চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা
- চিয়া সিড খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- চিয়া সিড খাওয়ার বাচ্চাদের জন্য উপকারিতা
- চিয়া সিড খাওয়ার নির্ধারিত পরিমাণ
- চিয়া সিড ব্যবহার করে চুলের যত্ন
- চিয়া সিড ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন
- চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় খাওয়ার উপকারিতা
- চিয়া সিড আসল চেনার উপায়
- চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা
- শেষ কথাঃ চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই পোস্টে।চিয়া সিড হলো ভেষজ জাতীয় খাদ্য। কারণ এই চিয়া সিড মরুভূমির দেশে জন্মায়। এটি মূলত সালভিয়া উদ্ভিদের বীজ। এই বিয়ের সাধারণত মধ্য আমেরিকার মধ্যে পাওয়া যায়। প্রাচীন কাল থেকে আজ অব্দি এই চিয়া সিডকে মানুষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে আসছে। বর্তমানে মানুষ খাদ্য সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। আর তাই প্রতিদিনের খাবারে কতটুকু পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার রয়েছে, আর সেইসব খাবার থেকে কতটুকু ভিটামিন পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কেও অনেক বেশি সচেতন।
যতগুলো পুষ্টিকর খাবার রয়েছে তারমধ্যে চিয়া সিড অন্যতম একটি পুষ্টিকর খাবার। তাছাড়া শরীরের জন্যেও চিয়া সিড খুবই পুষ্টিকর খাবার।চিয়া সিড হল বীজ জাতীয় খাবার। আর সমস্ত বীজ জাতীয় যেকোনো খাবারই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি এসিড, পটাশিয়াম, আইরন, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কয়ের সেটিন, ক্যালসিয়াম এবং আরো দ্রবণীয় অদ্রবনীয় আশ সমৃদ্ধ খাদ্য।চিয়া সিডের মধ্যে থাকা এসব পুষ্টিগুণ শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণভাবে উপকারী।
আরও পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
চিয়া সিডে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। চিয়া সিডে রয়েছে ক্যালসিয়াম। যা শরীরের হাড়ের স্বাস্থ্য মজবুত করে তুলে। শরীরে ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি পূরণে চিয়া সিড দুধের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি কার্যকরী। এছাড়াও ও সিয়া সিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষকরা এই খাদ্যকে স্যালমান মাছের থেকেও আট গুণ বেশি কার্যকরী হিসেবে মনে করে। যেটি শরীরের হৃদরোগ ও কোলেস্টেরল কমায়।চিয়া সিড শরীর থেকে বজ্র পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। এটি ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
চিয়া সিডের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের আমরা যেসব খাবার খাই সেসব খাবারের বিভিন্ন উপকারিতা থাকে। তবে এর উপকারিতার পাশাপাশি ও বিপরীত কিছু অপকারিতা ও থেকে থাকে। ঠিক তেমনি চিয়া সিডের বেলায়ও অপকারিতা রয়েছে। সিয়া সিড বেশি মাত্রায় খেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। কারণ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। আর অতিরিক্ত ফাইবার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিমাত্রায় এটি খেলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা এবং পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এর অপকারিতা জেনে তবে খাওয়া উচিত।
চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এটি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন খাওয়া যায়।চিয়া সিড সকালে খালি পেটে খাওয়া যায়। এছাড়াও রাতে খাওয়ার পর ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানিতে চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখুন। ভেজানো চিয়া সিড খাওয়ার সময় অন্য যে কোন খাবারের সাথে যেমন ফলের জুস, সালাদ, কাস্টার্ড ইত্যাদি খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।চিয়া সিড শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারে আসে। এটি গ্যাসের সমস্যা দূর করে। শরীরের হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া ও চিয়া সিড ওজন কমাতে সাহায্য করে।
চিয়া সিড অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে হয়। কেননা চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। এটি শুকনো ছাড়া যে কোনভাবে খাওয়া যেতে পারে। এটি খাওয়ার জন্য বিভিন্ন ড্রিংকস ও জুসের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। গরমের সময় যখন অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েন তখন যে কোন জুসের সাথে এটি মিশিয়ে খেতে পারেন।এতে করে শরীরের ক্লান্তি ও দুর্বল ভাব দূর হয়ে যাবে। এটি খাওয়ার সময় সালাদ কিংবা স্মুথির সাথে মিশিয়ে নিতে পারেন। যখন শরীর খুব ক্লান্ত এবং দুর্বল অনুভব হয় তখন মুখরোচো খাবার কিংবা পুষ্টিকর খাবারের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন।
চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। চিয়া সিড সাধারণত এক ধরনের বীজ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। এটি আশ জাতীয় হওয়ার কারণে পেটের হজম শক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।চিয়া সিড খাওয়ার ফলে ক্ষুধা মন্দা দূর হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকার কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে। যারা অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য চিয়া সিড খুবই উপকারী। এটি খাওয়ার ফলে অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
চিয়া সিডে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। এছাড়া ও হৃদরোগ ও এলার্জির সমস্যার বিরুদ্ধেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।চিয়া সিডে থাকা অনেক বেশি ফাইবার ও প্রোটিন অন্য যে কোন খাবারকে হার মানাতে সাহায্য করে।এতে রয়েছে ভিটামিন,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আইরন, ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব উপাদান থাকার কারণে চিয়া সিড শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারে আসে। এটি শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। চিয়া সিড শরীরের কোলন পরিষ্কার করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
চিয়া সিড খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। চলুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।চিয়া সিড খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। তবে এটি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে উপকারের বদলে অপকার বেশি করবে। কেননা শরীরের জন্য অতিরিক্ত কোন খাবারই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। চিয়া সিড যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে পেটের গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয়। এটি অনেক বেশি খাওয়ার ফলে শরীরের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া চিয়া বীজ বেশি খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন অতিরিক্ত কমে যায়।
শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ডাক্তার আমাদের ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে বলেন। তবে এই ফাইবার যুক্ত খাবার যদি আমরা অতিরিক্ত হাড়ে খেয়ে ফেলি তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ঠিক তেমনি চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এটি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। যদি আমরা এটি অতিরিক্ত খায় তাহলে আমাদের শরীরে পেটের সমস্যা, হজম ও ডায়রিয়া, এবং গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া ও চিয়া সিড অতিরিক্ত খেলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। এর ফলে চিকিৎসক সবসময় খাওয়ার সাথে পরিমাণ মতো পানি খেতে বলেন।
চিয়া সিড খাওয়ার বাচ্চাদের জন্য উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়া বাচ্চাদের জন্য বেশ উপকারী।এটি বাচ্চাদের শরীরে বিভিন্ন উপকার হিসেবে কাজ করে। চিয়া সিডে থাকা বিভিন্ন ওমেগা ফ্যাটি এসিড বাচ্চাদের শরীর এবং ব্রেনের জন্য অনেক বেশি কাজ করে। চিয়া সিডে রয়েছে সলিউবল ফাইবার। যা শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে দেয়।চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আইরন। যেটি দৈহিক চাহিদার ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।চিয়া সিডে রয়েছে ৪২% আইরন, যা দৈনিক চাহিদার সমপরিমাণ। চিয়া সিডে থাকা জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, প্রাচীন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চাদের শরীরে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি বাচ্চাদের শরীরে পেশী গঠনে সাহায্য করে।
চিয়া সিড খাওয়ার নির্ধারিত পরিমাণ
চিয়া সিড খাওয়ার সময় অবশ্যই নির্ধারিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।পরিমাণ মতো চিয়া সিড খেলে শরীরে বিভিন্ন উপকারিতা আসে। চিয়া সিড খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত। এটি খাওয়ার নিয়ম হলো প্রতিদিন কিংবা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এক থেকে দের চামচ খাওয়া উচিত। এটি খাওয়ার জন্য এই পরিমাণটাই আমাদের শরীরের জন্য একদম ঠিক। শরীরে যে পুষ্টি উপাদান চিয়া সিড থেকে আসবে তা এই পরিমাণে যথেষ্ট।
চিয়া সিডে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন ওমেগা তিন ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, জিংক, ইত্যাদি উপকরণ থেকে শরীরের বিভিন্ন উপকারিতা আসে। এই উপাদানগুলো শরীরে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। চিয়া সিড খাবার সময় অবশ্যই পরিমাণ মতো খেতে হবে। নিয়ম করে প্রতিদিন কিংবা সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন খাওয়া যায়। এটি খাওয়ার সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাইতে হয়।চিয়া সিড শুকনো ছাড়া যে কোন ভাবে খাওয়া যায়। পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য আরও বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খাওয়া যায়।
চিয়া সিড ব্যবহার করে চুলের যত্ন
চিয়া সিড ব্যবহার করে চুলের যত্ন নেওয়ার সঠিক উপায় চলুন জেনে নিই। ঘরোয়া উপায়ে চিয়া সিড ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি হিয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারবেন। এটি চুলের জন্য খুবই উপকারী। শীতকাল কিংবা গ্রীষ্মকাল যেকোনো সময়েই চিয়া সিড ব্যবহার করে চুলের যত্ন নেওয়া যায়। আপনি বাড়িতে বসেই চিয়া সিড দিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করুন। প্রথমে আপনি এক গ্লাস পানি নিন। তাতে এক চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখুন। এটা ভিজানোর পর যখন জেলের মত হয়ে যাবে তখন এর সাথে আরো কিছু উপকরণ মিশিয়ে নিন। যেমন ভিনেগার, নারিকেল তেল, এবং মধু। এগুলো চিয়া সিডের জেলের সাথে এই উপকরণ গুলো মিশ্রিত করে নিন।
এরপর এই মিশ্রনটি ৩০ সেকেন্ডের মত গরম করে নিন। এরপর সেটি ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে নিন। ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা হওয়া এই হিয়ার মাস্কটি আপনার চুলে লাগিয়ে নিন। ৫ থেকে ১০ মিনিট রাখার পর চলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনি সপ্তাহে একদিন এবং মাসে ৩ থেকে ৪ দিন ব্যবহার করতে পারেন। চুলের যত্ন নিতে এটি যদি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল স্বাস্থ্যজ্জল হবে। চিয়া সিড চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনারের কাজ করে। তাই এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
চিয়া সিড ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন
চিয়া সিড ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব।কেননা চিয়া সিডে থাকা বিভিন্ন উপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ও চিয়া সিড মুখে বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। চিয়া সিডে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। চিয়া সিডে রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটি ত্বকের বিভিন্ন দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। চিয়া সিড ত্বকের আরও বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। এছাড়া যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
চিয়া সিড ত্বকে ব্যবহার করার জন্য এর ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে হবে। ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য চিয়া সিড পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এক থেকে দেড় চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে জেল তৈরি করে নিতে হবে। ভেজানো এই জেলে এক দের চামচ মধু মিশ্রিত করতে হবে। এরপর এটি আপনার মুখের স্কিনে লাগিয়ে নিন। ৫ থেকে ৮ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর সাবান কিংবা ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও এটি নিয়মিত খেতে পারলে আরো বেশি উপকার পাবেন।
চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় খাওয়ার উপকারিতা
চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় খুবই কার্যকরী একটি খাবার। গর্ভাবস্থায় আপনি যেসব ধরনের খাবার খাবেন সেই সব খাবারের ওপর নির্ভর করে আপনার শরীরে পুষ্টির যোগান দিবে। এছাড়া ও আপনার এবং আপনার বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা তাদের শরীর এবং বাচ্চাকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন খাদ্য উপাদান খেয়ে থাকেন। তবে এটা অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত যে খাবার তালিকাতে সেই সব খাবার রাখা উচিত যেগুলো খেলে পুষ্টি উপাদান বেশি পাওয়া যায়।
গর্ভকালীন সময়ে ওমেগা ৩ এসিডের পরিমাণ বেশি প্রয়োজন হয়। এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে খাবারে বেশি পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন পড়ে। ওমেগা ৩ এসিড চিয়া সিডে বেশি পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি প্রয়োজন। আর এগুলো রয়েছে চিয়া সিডে। ওমেগা তিন অ্যাসিড এর পরিমাণ গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি প্রয়োজন। কেননা এর পরিমাণ যদি সঠিক ভাবে হয় তাহলে গর্ভ অবস্থায় থাকা শিশুর সঠিক সময়ে জন্মানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।চিয়া সিট গর্ভের সন্তানকে সুস্থ রাখে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় পরিমাণ মতো চিয়া সিড খান এবং আপনি সুস্থ থাকুন ও গর্ভের সন্তানকে সুস্থ রাখুন।
চিয়া সিড আসল চেনার উপায়
চিয়া সিড কেনার আগে অবশ্যই আসল নকল দেখেই কিনবেন। কেননা নকল চিয়া সিড হলে উপকার তেমন পাওয়া যাবে না।তাই চিয়া সিড কিনার জন্য আসল টাই কিনবেন। আসল চিয়া সিড চেনার উপায় হল এটি সব সময় ফ্রেশ এবং ঝরঝরা থাকবে। এটি কখনো একটি দানা অন্যটির সাথে আঠালোভাবে লেগে থাকবে না। এরমধ্যে অন্য কোন ধুলাবালি বা নোংরা জাতীয় কোন কিছুই থাকবে না। চিয়া সিডে পচা বা বাসি দুর্গন্ধ বের হবে না। চিয়া সিড সময় অবশ্যই কালোটা দেখে কিনবেন।
চিয়া সিড খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা
চিয়া সিড উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা ও রয়েছে। কেননা আমরা জানি যে অতিরিক্ত কোন খাবারের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই চিয়া সিড ও অতিরিক্ত খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। চিয়া সিড খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিয়ে তবে এটি সেবন করবেন। এটি নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে পেয়েছেন যে, অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এটি অতিরিক্ত সেবনের ফলে এই ক্যান্সার গুলোকে বাড়িয়ে দেয়। তাই এই সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চিয়া সিড বেশি বেশি না খেয়ে পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
চিয়া সিড অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেটের গ্যাস্টিকের সমস্যা বাড়তে পারে। অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন অনেক বেশি কমে যায়। যার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এটি খাওয়ার সময় পরিমাণ মতো খেতে হবে। এছাড়া আমরা জানি যে প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো এবং খারাপ রয়েছে। তবে সেটি যদি আমরা পরিমাণ মতো ব্যবহার করতে পারে তাহলে খারাপের থেকে ভালোটা আশা করা যায়। কিন্তু যদি সেটি অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে এর ফলাফল বিপরীতটা আসবে।
শেষ কথাঃ চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের পোস্টে। চিয়া সিডের বিশেষ বিশেষ পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা, শিশুদের জন্য এবং গর্ভবতী মায়ের জন্য কতটা উপকারী সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে চিয়া সিড সম্পর্কে এবং এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ও বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আরো বিভিন্ন তথ্য ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url