দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়
পেজ সূচিপত্রঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয় সেই উপায় গুলো হলোঃ
- দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়
- দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্ত হওয়ার কারণ
- দাঁতের রুট ক্যানেল করার নিয়ম-কানুন
- দাঁতে রুট ক্যানেল করার খরচ কত
- দাঁতের রুট ক্যানেল করা হয় কেন
- দাঁতের রুট ক্যানেল এর ক্ষতিকর দিকগুলো
- দাঁতের রুট ক্যানেল করার পরে করনীয়
- দাঁতে রুট ক্যানেল করার পর কি কি খাওয়া যায়
- রুট ক্যানেল করার পর কতদিন স্থায়ীত্ব হয়
- শেষ কথাঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়
দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়
দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয় সে সম্পর্কে বলতে গেলে, দাঁতে রুট ক্যানেল করা দাঁতের স্থানান্তর সম্পর্কিত প্রক্রিয়া। দাঁতের প্রকৃত স্থান থেকে নতুন স্থানের স্থানান্তরিত করা হয়। রুট ক্যানেল হলো দাঁতের জন্য একটি চিকিৎসা প্রক্রিয়া। যা দাঁতের ভিতরের নরম টিস্যু সংক্রমিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাঁতের ভেতরের পাল্প অপসারণ করা হয় এবং পুনরায় দাঁতটি পুনরুদ্ধার করা হয়। দাঁতের রুট ক্যানেল করার বিভিন্ন প্রক্রিয়া রয়েছে। সেগুলো ধাপ আকারে বর্ণিত করা হলোঃ
- পরীক্ষা ও রেডিওগ্রাফিঃ ডাক্তার প্রথমে দাঁতের অবস্থা পরীক্ষা করবে এবং প্রয়োজন পড়লে রেডিওগ্রাফি করেন যাতে দাঁতের ভিতরে সমস্যা নির্ণয় করা যাই।
- অ্যানোস্থেসিয়াঃ রোগীকে অস্বস্তি থেকে মুক্ত রাখার জন্য অ্যানোসথেসিয়া দেওয়া হয়।
- দাঁতের প্রস্তুতিঃ ডাক্তার দাঁতের উপর একটি রাবার ড্যাম ব্যবহার করেন যেটি কাজ করার সময় লালাবা অন্য পদার্থ ভেতরে প্রবেশ না করে।
- পাল্প অপসারণঃ দাঁতের ভেতরের বাল্ব অপসারণ করার জন্য একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োজন হয়।
- নালীর পরিষ্কার করাঃ দাঁতের রুট ক্যানেল পরিষ্কার করা হয় এবং জীবাণুমুক্ত করা হয় যেন সংক্রমণ না থাকে।
- পরীক্ষা এবং এক্সরেঃ ডাক্তার দাঁতের পরীক্ষা করেন এবং এক্সরে করেন যেন সংক্রমণের মাত্রা নির্ণয় করা যায়।
- সংবেদনহীনতাঃ এই প্রক্রিয়া শুরু করার মাধ্যমে আক্রান্ত জায়গায় ওষুধ প্রয়োগ করা হয় যাতে আপনি ব্যথা অনুভব না করেন।
- আকৃতি দেওয়া এবং সিল করাঃ দাঁতের রুট ক্যানেল পরিষ্কার এবং আকার দেওয়া হয়। তারপর সেখানে বিশেষ থ্রিলার দিয়ে পূরণ করা হয় যেন পুনরায় সংক্রমণ না ঘটে।
- পুনর্গঠনঃ ধাত্রী সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠনের জন্য সাধারণত একটি ক্রাউন বা ফিলিং ব্যবহার করা হয়। যেন রাত্রি শক্তিশালী হয় এবং স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ফিরে পায়।
দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্ত হওয়ার কারণ
দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলতে গেলে প্রধানত দাঁতের এটি হলো ব্যাকটেরিয়া। মুখে খাবার এবং বিশেষ করে চিনিযুক্ত খাবার জমে যাওয়ার কারণে দাঁতের ব্যাকটেরিয়া সে খাবারগুলোকে ভেঙ্গে দেয় এবং এসিড তৈরি করে। এই এসডি গুলো দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। এবং ক্যাভিটি সৃষ্টি করে। দাঁতের বিভিন্ন কারণে ক্যাভিটি হতে পারে। এমন কিছু কারণ রয়েছে যেসব কারণে ক্যাভিটি ও দাঁতের গর্ত হয়ে যায়। সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- খাদ্য এবং পানীয়ঃ চিনি যুক্ত এবং স্টার্স যুক্ত খাবার ও পানিয় দাঁতের মাঝে আটকে থেকে ব্যাকটেরিয়া বাড়ায়। যাদাতের ভেতরে এসিড উৎপন্ন করে এবং এনামেল ক্ষয় করে।
- দাঁত পরিষ্কার না রাখাঃ নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করলে খাবারের কনা এবং প্লাক জমে দাঁতে ক্যাভিটি ও গর্ত হতে পারে।
- প্লাক জমাঃ ব্ল্যাক হল এক ধরনের চ্যাটসাটে ফিল্ম যা দাঁতে জমে থাকে এবং ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে। এটি এসিড উৎপন্ন করে যাদের এনামেলকে ক্ষয় করে দেয়।
- ফ্লোরাইড এর অভাবঃ দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করার জন্য ফ্লোরিডের প্রয়োজন। ফ্লাইট দাঁতের ক্যাভিটিকে রক্ষা করে। যদি ফ্লোরাইড এর অভাব হয় তাহলে দাঁতের ক্যাভিটি বাড়তে থাকে।
- দাঁতের গঠনঃ দাঁতের খাস বা ফাটল থাকলে সেখানে খুব সহজে খাদ্য আটকে যায় এবং ক্যাভিটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- জেনেটিক ফ্যাক্টরঃ কিছু কিছু মানুষের দাঁতের গঠন এমন যে এগুলোর মধ্যে এলোমেলের গুনমান এর কারণে দুর্বল হয়ে যায়।
- মৌখিক স্বাস্থ্য সমস্যাঃ মৌখিক স্বাস্থ্য সমস্যা ক্যাভিটির ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করে।
দাঁতের রুট ক্যানেল করার নিয়ম কানুন
দাঁতের রুট ক্যানেল করার নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি পড়ুন। দাঁতের রুট ক্যানেল হলো একটি চিকিৎসা প্রক্রিয়া। যা সাধারণত দাঁতের ভেতরের পাল্প সংক্রমিত হলে করা হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাঁতের রুট ক্যানেল করার জন্য কিছু নিয়ম কানুন অনুসরণ করতে হয়। যেন রোগীর নিরাপত্তা এবং চিকিৎসার কার্যকারিতা নিশ্চিত করা যায়। দাঁতের রুট ক্যানেল করার জন্য কিছু নিয়মকানুন উল্লেখ করা হলোঃ
আরও পড়ুনঃ শীতকালে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
রোগীর প্রস্তুতিঃ
- চিকিৎসকের সাথে আলোচনাঃ রোগীকে চিকিৎসার আগে সকল প্রশ্ন এবং উদ্বেগ নিয়ে চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করতে হবে।
- স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইতিহাসঃ রোগীকে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইতিহাস, এলার্জি এবং বর্তমান চিকিৎসা সম্পর্কে ডাক্তার কে জানানো প্রয়োজন।
- পূর্ব পরিকল্পনাঃ চিকিৎসক রোগীর রুট ক্যানেল করার প্রক্রিয়াটি কি করে করবেন তার বিস্তারিত জানিয়ে দিবেন।
- খাবার গ্রহণঃ রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসার আগে হালকা খাবার খাওয়াতে হবে। কেননা রুট ক্যানেল করার পর খাবার খেতে সমস্যা হতে পারে।
- ঔষধ গ্রহণঃ চিকিৎসক কোন ব্যাথা নাশতা এন্টিবায়োটি ঔষধ দিলে তার সময় মতো গ্রহণ করতে হবে।
প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিঃ
- অ্যানোস্থেসিয়াঃ অ্যানোস্তেসিয়া দেয়া হবে যাতে রোগীকে কোন অস্বস্তি ভোগ করতে না হয়।
- রাবার ড্যামঃ চিকিৎসক দাতের চারপাশে একটি রাবার দাম ব্যবহার করেন যাতে কাজ করার সময় লালা বা অন্যান্য পদার্থ দাঁতের ভিতরে প্রবেশ না করে।
চিকিৎসার প্রক্রিয়াঃ
- দাঁতের পরীক্ষাঃ ডাক্তার দাঁতের অবস্থা পরীক্ষা করবে এবং প্রয়োজনীয় রেডিওগ্রাফি করেন।
- পাল্প অপসারণঃ ডাক্তার দাঁতের ভেতরের পাল্প অপসারণ করেন। এটি একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়।
- নারী পরিষ্কার করাঃ দাঁতের রুটনালি অবশ্যই পরিষ্কার করা হয় এবং জীবনে মুক্ত করা হয়।
পুনরুদ্ধারঃ
- দাঁতের পুনর্গঠনঃ রুট ক্যানেল করার পর যাত্রী অবশ্যই পুনরুদ্ধার করার জন্য ফিলিং করা হয়।
- পুনঃনিরীক্ষাঃ চিকিৎসার পর কিছুদিন রোগীকে পুনঃনিরীক্ষার জন্য আসতে বলা হয়।
রোগীর যত্নঃ
- পোস্ট অপারেটিভ নির্দেশনাঃ রোগীর চিকিৎসা করার পর কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। যেমন ব্যাথা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ খাবার খাওয়ার জন্য বিশেষ সর্তকতা ইত্যাদি।
- নিয়মিত চেকআপঃ রোগীকে নিয়মিত অবশ্যই চেকআপের জন্য আসতে বলা হয় যাতে দাঁতের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা যায়।
বিশেষ সর্তকতাঃ
- এলার্জিঃ রোগী যদি কোন এলার্জি সমস্যায় থাকে তাহলে চিকিৎসকে অবশ্যই জানাতে হবে।
- অন্যান্য সমস্যাঃ রোগীর যদি অন্যান্য গুরুতর কোন সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
দাঁতের রুট ক্যানেল করার খরচ কত
দাঁতের রুট ক্যানেল করার খরচ বিভিন্ন কারণে পরবর্তীতে হয়ে থাকে। যেমন দাঁতের অবস্থান, চিকিৎসার জটিলতা এবং চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের রুট ক্যানেল করার জন্য খরচ ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে আপনার দাঁতের অবস্থা এবং ক্যানেল করার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী খরচের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে। আপনার দাঁতের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হলোঃ
আরও পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
- সাধারণ খরচঃ দাঁতের রুট ক্যানেল করার জন্য ৩০০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
- দাঁতের অবস্থানঃ মোলার দাঁতের জন্য খরচ একটু বেশি হয়। কারণ চিকিৎসা করতে গেলে এই দাঁতের জন্য বেশি সময় লাগে এবং জটিলতা প্রয়োজন পড়ে।
- বিশেষজ্ঞ ডেন্টিস্টঃ দাঁতের চিকিৎসার জন্য অভিজ্ঞ ডেন্টিস্ট এর কাছে একটু বেশি খরচ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- রেডিওগ্রাফিঃ চিকিৎসার পূর্বে রেডিওগ্রাফি করার জন্য অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
- পুনর্গঠনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল করার পর দাঁত পুনর্গঠনের জন্য আলাদা খরচ হয়।
- বীমা কভারেজঃ রোগীর স্বাস্থ্য যদি বীমা থাকে, তাহলে কিছু খরচ বীমার মাধ্যমে কভার করা যেতে পারে।
- শহর ও ক্লিনিকঃ শহরের ভিন্নতা এবং ক্লিনিকের মান অনুযায়ী খরচের পরিমাণ কম বেশি হতে পারে।
দাঁতের রুট ক্যানেল করা হয় কেন
দাঁতের রুট ক্যানেল করা হয় মূলত দাঁতের পাল্পের সংক্রমণ বা ক্ষতিকর দিকগুলো দূর করার জন্য। যখন দাঁতের মধ্যে সংক্রমিত হয়, তখন দাঁতে ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার মাধ্যমে এ সকল সমস্যা গুলোর সমাধান করা যায়। দাঁতের রুট ক্যানেল প্রক্রিয়া দাঁত কে সংরক্ষণ করে এবং ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। যেটি দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কারণ উল্লেখ করা হলোঃ
- পাল্পের সংক্রমণঃ দাঁতের ভিতরে বাল্ব সংক্রমিত হলে সেটি ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করে। রুট ক্যানেল চিকিৎসার মাধ্যমে এই সংক্রমণ অপসারণ করা যায়।
- দাঁত বাঁচানোঃ দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসা দাঁত কে বাঁচানোর একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এর মাধ্যমে দাঁতের মূল অংশকে রক্ষা করে এবং দাঁতকে পুনরায় সুস্থ করে দেয়।
- ব্যথা কমানোঃ রুট ক্যানেল চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁতের ব্যথা কমে যায় যা রোগীর জন্য আরামদায়ক।
- জীবাণুমুক্তকরণঃ রুট ক্যানেল করার মাধ্যমে দাঁতের ভেতরের অংশ জীবাণুমুক্ত করা হয় যা ভবিষ্যতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।
- দাঁতের ক্ষয়ঃ বিভিন্ন কারণে দাঁতের ক্ষয় হলে তা রুট ক্যানেল চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান করা যায়।
- লক্ষণঃ দাঁতের তীব্র ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা মাড়ির সমস্যা হলে রুট ক্যানেল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
দাঁতের রুট ক্যানেল এর ক্ষতিকর দিকগুলো
দাঁতের রুট ক্যানেল একটি সাধারন এবং কার্যকর চিকিৎসা। তবে এর কিছু ক্ষতিকর দিক ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। দাঁতের রুট ক্যানেল করার পর নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। নিয়মিত ওষুধ সেবন, খাবারের সঠিক তালিকা যথার্থ পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। অসাবধানতা বশতায় এমন কিছু করা উচিত নয় যেটা দাঁতের জন্য ক্ষতি করে। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। রুট ক্যানেল করার পর এর ক্ষতিকর দিকগুলো হলো :
- চিকিৎসার পর ব্যথাঃ এমন অনেক রোগে আছে যারা চিকিৎসার পর কিছুদিন ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন তবে এটা অল্প সময়ের জন্য।
- সংক্রমনের ঝুঁকিঃ দাঁতের ভেতরের অংশ সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত যদি না হয় তাহলে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
- দাঁতের দুর্বলতাঃ রুট ক্যানেল চিকিৎসার পর দাঁত কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এটা হওয়ার কারণ যদি দাঁতের ওপর ক্রাউন না দেওয়া হয়।
- চিকিৎসার প্রয়োজন আবারওঃ এমন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় চিকিৎসার পর দাঁতের সমস্যা আবার হয়ে যায়। এইজন্য পুনরায় দাঁতের রুট ক্যানেল করতে হতে পারে।
- এলার্জি সমস্যাঃ চিকিৎসার সময় যে অ্যানোসথেসিয়া অথবা অন্যান্য ওষুধের প্রতি এলার্জির প্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- খরচঃ দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার পর দাঁত পুনরায় গঠনের জন্য অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
- মানসিক চাপঃ অনেক রোগী দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার সময় মানসিক চাপে সম্মুখীন হতে পারে।
- দাঁতের দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলঃ দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার পর দাঁতের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য উদ্বেগ থাকতে পারে। বিশেষ করে চিকিৎসা যদি সঠিকভাবে না করা হয়।
দাঁতের রুট ক্যানেল করার পরে করনীয়
দাঁতের রুট ক্যানেল করার পরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে চলা উচিত। যেন দাঁতের চিকিৎসা করার পর ফলাফল ভালো হয় এবং পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়। দাঁতের চিকিৎসা করার পর প্রায় সময়ই দাঁতের ব্যথা হয়ে থাকে। তাই চিকিৎসকের কাছ থেকে ব্যথা নাশক ওষুধ গ্রহণ করা উচিত। দাঁতের ব্যথার জন্য সব সময় এই ওষুধগুলো গ্রহণ করুন এবং যদি খুব বেশি ব্যথা হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খাবারের ক্ষেত্রে প্রথম কয়েকদিন নরম খাবার খান। খাবার খান যেটা চিবানোর সহজ হয়। যেমন স্যুপ, পুডিং ইত্যাদি।
দাঁত রুট ক্যানেল চিকিৎসার পর নিয়মিত খাবার খাওয়া এবং প্রতিবার খাওয়ার পরে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। ডাক্তার যদি পরবর্তী এপয়েন্টমেন্ট এর জন্য ডাকে তাহলে অবশ্যই সময় মত যেতে হবে এবং পরামর্শ নিতে হবে। রুট ক্যানেল এর পরে দাঁতটি সুরক্ষিত রাখার জন্য স্থায়ী ফিলিং প্রয়োজন হয়। এটি সময় মত করলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য রুট ক্যানেল এর পর দাঁত এবং মাড়ি সুস্থ রাখতে প্রতিদিন দুইবার ব্রাশ করতে হবে এবং নিয়মিত ফ্লাশ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
দাঁতের চিকিৎসার পর কিছু সময় বিশ্রাম নিন। কারণ বিশ্রাম নিলে আপনার শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করবে। ব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনাকে চিকিৎসক যে ব্যাথা নাশক ওষুধ দিবে সেগুলো নিয়মিত গ্রহণ করুন। এছাড়া খাদ্যাভাস পরিবর্তন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ২৪ ঘন্টা নরম এবং ঠান্ডা খাবার খেতে হবে। বেশি গরম বা কঠিন খাবার এড়িয়ে চলুন। এটি ব্যথা বাড়াতে পারে। চিকিৎসা করার পরও যদি ব্যথা বা ফুলার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
দাঁতে রুট ক্যানেল করার পর কি কি খাওয়া যায়
দাঁতে রুট ক্যানেল করার পর কিছু সময়ের জন্য খাবার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা চিকিৎসার পর দাঁত এবং মাড়ির চারপাশে অস্বস্তি এবং ব্যথা হতে পারে। আর সেজন্য রুট ক্যানেল করার পর নরম এবং ঠান্ডা খাবার খাওয়া উচিত। এমন খাবার যেটি সহজে হজম হয় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। দাঁতের রুট ক্যানেল করার পর কিছু খাবার যেগুলো দাঁতের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে এবং তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করে। সেসব খাবার গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- দইঃ দই এমন একটি খাবার যাওয়া সহজে হজম হয় এবং ঠান্ডা থাকে। যা ব্যথা কমাতে অধিক সাহায্য করে।
- পিউরি ও সুপঃ আলু গাজর বা অন্যান্য সবজির পিউরি খেতে পারেন। আর্য্য অবশ্যই গরম না করে ঠান্ডা বা উষ্ণ খাওয়ার চেষ্টা করুন। যা পুষ্টিকর এবং সহজে খাওয়া যেতে পারে।
- ফলমূলঃ এই সময় এমন ফলমূল খাওয়া উচিত যেগুলো মসৃণ ও স্মোদি। যেমন কলা, পাকা পেঁপে, আপেল সস খেতে পারেন।
- শস্যদানাঃ ওটমিল নরম ও খুব ভালো একটি অপশন। নরম রুটি বা ব্রেড খেতে পারেন। তবে এটি খুব শক্ত না হওয়া উচিত।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ সিদ্ধ ডিম ও নরম মাংস যেমন চিকেন বা মাংসের ইস্টিউ ইত্যাদি খেতে পারেন। যেগুলো দাঁতের রুট ক্যানেল করার পরও খুব সহজে খাওয়া যায়।
- পানিয় খাবারঃ এ সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। চা বা কফিও খেতে পারেন। তবে গরম নাই বরং উষ্ণ বা ঠান্ডা অবস্থায় খেতে পারেন।
কঠিন খাবার,গরম খাবার, মসলাদার খাবার, শর্করা বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ।এসব খাবার থেকে দূরে থাকুন। কেননা এসব খাবার দাঁতের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। দাঁতের চিকিৎসার পর অবশ্যই দেখেশুনে এবং পর্যবেক্ষণ করে খাবার খাওয়া উচিত।
রুট ক্যানেল করার পর কতদিন স্থায়ীত্ব হয়
দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসা করার পর দাঁতের স্থায়িত্ব এবং সুস্থতার ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিকভাবে দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসা করা হয় তবে অনেক বছর ধরে কার্যকর থাকতে পারে। রুট ক্যানেল করা দাঁত সাধারণত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়। দীর্ঘ সময় স্থায়িত্ব হওয়ার কারণ দাঁতের সঠিক যত্ন। রুট ক্যানিং করার পর যদি দাঁতের সঠিক যত্ন নেওয়া হয় তাহলে অনেক সময় পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। দাঁতের রুট ক্যানেল এর পর যে ফিলিম দেয়া হয় তার গুণমান যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয় তাহলে দাঁতটি দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়।
দাতে নিয়মিত ব্রাশ এবং ফ্লস করা। এছাড়াও ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী দাঁতের যত্ন ও খাবার প্রয়োজন। দাঁতের স্বাস্থ্য ও দাঁতকে সুস্থ রাখার জন্য এবং দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য খাবারের দিক বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এমন অনেক আছে যারা অত্যাধিক শক্ত এবং আঠালো খাবার খেয়ে দাঁতের অবস্থা খারাপ করে দেয়। আর তাই দাঁতের চাপ কমাতে অবশ্যই নরম যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া ঘনঘন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
শেষ কথাঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয়
দাঁতের রুট ক্যানেল কিভাবে করা হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। দাঁতের রুট ক্যানেল একটি কার্যকর চিকিৎসা। এই চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের আক্রান্ত স্থান সুস্থ করতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার দাঁতের রুট ক্যানেল চিকিৎসার পদ্ধতি জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্যই ছিল। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য এবং আমাদের ওয়েবসাইটে সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url